বাজেট সেরা মোবাইল ফোন POCO X2!
![]() |
Xiaomi POCO X2 |
Xiaomi-র সাব ব্র্যান্ড Poco সিরিজের ফোন Poco F1 এর কথা সবার হয়তো মনে আছে।
সেই ফোনটি ছিল সুপারহিট কারণ কম দামে অনেক ভালো জিনিস দিচ্ছিল Poco F1 ।
Pocophone-এর দ্বিতীয় ভার্সন Poco F2 না হয়ে নাম হয়েছে Poco X2 যেটি নিয়ে আজকে ( Creator Academy Bengali ) আমি কথা বলব।
আমরা যেরকমটা দেখেছিলাম পোকোফোন অনেক কম দামে অনেক ভালো জিনিস দিচ্ছিল, সে প্রত্যাশাটা Poco X2 তেও আছে।
আমরা আজকে দেখার চেষ্টা করব যে Poco F1 এর মত Poco X2 কি কম দামে ভালো জিনিস দিচ্ছে কিনা।
Poco X2 বেশ কিছুদিন ইউজ করার ( Creator Academy Bengali ) পরে আমার মনে হয়েছে সেটি আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
প্রথমেই প্রশ্ন হচ্ছে Poco F2 থেকে X2 কেন হয়ে গেল?
অনেকেই বলছে Realme-র সাথে কম্পিটিশন করার জন্য সরাসরি নামটা একটু চেঞ্জ করে Realme X2 এর সাথে মিল করেছে।
হতেও পারে, কারণ Poco X2 ও Realme X2 এর স্পিসিফিকেশন অনেকটাই মিলে।
তবে বলে রাখা ভালো Poco X2 হচ্ছে Redmi K30 এর একটা রি-ভার্শন বা বলতে পারেন Redmi K30 এর নামটা কেটে Poco X2 অ্যাড করে ইন্ডিয়ায় লঞ্চ করা হয়েছে।
ইন্ডিয়ায় এর দাম ₹16000 রুপী এবং বাংলাদেশ এর অফিশিয়াল দাম এরাউন্ড অফ ৳26000 টাকা। তবে আমার মনে হয় এর দাম অনেকটা কমে যাবে।
এখন কথা বলি ফোনটির ডিজাইন কোয়ালিটি নিয়ে
ফোনটি হলো একটি গ্লাস স্যান্ডউইচ ফোন যার পেছনে রয়েছে একটি ( Creator Academy Bengali )বাম্পের মত ক্যামেরা বাট এটা ফ্ল্যাট কারণ এটা উচু না এর চারপাশে একটি রাউন্ড সার্কেল দেয়া হয়েছে।এটা হচ্ছে একদমই প্লেন।
তবে এই ডিজাইনটি অনেকের কাছে ভাল লাগলেও আমি পার্সোনালি মনে করি এটা একটু বেশি এট্রাক্টিভ হয়েছে আমার কাছে মিনিমালিস্টিক ডিজাইন বা সিম্পল ডিজাইন ভালো লাগে।
অনেকেরই পছন্দ হতে পারে তাই মনে হয় এমনটি করেছে।
এই ফোনটির উপরের দিকে রয়েছে একটি নরমাল মাইক্রোফোন এবং 3.5 এমএম অডিও জ্যাক রয়েছে।
বামপাশে পেয়ে যাবেন হাইব্রিড নেনো সিম কার্ড স্লট, আপনারা চাইলে একটা সিম কার্ড এবং একটা মেমোরি কার্ড ইউজ করতে পারেন অথবা দুইটা সিম কার্ড ইউজ করতে পারেন।
এর ঠিক ডান পাশেই আছে ( Creator Academy Bengali ) বেসটেকটেল ফিল দেয়া ভলিউম আপ এন্ড ডাউন বাটন, তার ঠিক নিচেই পাবেন ফিঙ্গার প্রিন্ট স্ক্যানার।
সাইডমাউন্টেড ফিঙ্গারপ্রিন্ট এর প্রতি আমি বরাবরই খুব বেশি উইক, আমার প্রাইমারি ডিভাইসেও সাইড মাউন্টেড ফিঙ্গারপ্রিন্ট আছে কারণ আমার মনে হয় সাইড মাউন্টেড ফিঙ্গারপ্রিন্ট একটু বেশি রিচেবল।
তবে এই ফোনের ক্ষেত্রে একটা সমস্যা হচ্ছে, ফোনটি হাতে নেওয়ার সাথে সাথেই এক্সিডেন্টলি ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরে আঙ্গুল লাগলেই বারবার ফোনটি লক হয়ে যাচ্ছিল।
তবে এই সমস্যার সমাধান এই ফোনটিতে আছে,
এই ফোনের সেটিংস্ এ দুইটা অপশন আছে একটা হচ্ছে টাচ লক-আনলক, অপরটি হচ্ছে প্রেস লক-আনলক।
আমরা যদি প্রেস লক-আনলক অপশনটি সিলেক্ট করে রাখি সে ক্ষেত্রে ফোনটির ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর একটু জোরে প্রেস করলে ফোনটি লক হবে একইভাবে আবারও জোরে সেন্সর টিতে প্রেস করলে ফোনটি আনলক হবে।
এই ফাংশনটি আমার কাছে যথেষ্ট ভালো লেগেছে। আর এর আনলকিং স্পিড টেস্ট যথেষ্ট ফাস্ট যে কারণে আমার মনে হয় এটা বড় একটা ইমপ্রুভমেন্ট।
ফোনটির ঠিক সামনের দিকে আছে ম্যসিভ 6.6 ইঞ্চির একটি আইপিএস এলসিডি প্যানেল উইথ ডুয়েল ক্যামেরা কাটাউট ইন দি ফ্রন্ট।
এ কারণে দেখতে অনেকটা Samsung Galaxy S10 Plus এর মত মনে হয। বেস্ট প্রিমিয়াম ফিল দেয় সামনে থেকে ডিসপ্লেটি দেখতে, তবে ডিসপ্লেটির আরেকটি স্পেশল ফিচার হচ্ছে এটিতে ইউজ করা হয়েছে 120 GHz এর একটি ডিসপ্লে।
যে কারণে অনেক সময় আপনি প্রত্যেকটা ট্রানজেকশন যখন এদিক-ওদিক নেবেন অ্যাপ ড্রয়ার ওপেন করবেন কিংবা নোটিফিকেশন প্যানেলে ওপেন করবেন অনেকটা ফ্রেশ এবং স্পিডি একটা ফিলিং আপনারা পাবেন।
এটা একমাত্র সেই বুঝতে পারবে যে 120 GHz এর ডিসপ্লে ইউজ করেছে।
রেগুলারলি আমরা যখন 60GHz ডিসপ্লের ফোন ইউজ করি তখন হয়তো খুব একটা মেজোর ডিফারেন্স আমরা বুঝতে পারিনা কিন্তু আপনি পাশাপাশি রেখে যখনই দুইটা ফোনের কমপেয়ার করবেন তখনই ফিল করতে পারবেন কতটা ডিফারেন্স।
তবে রেগুলার গেম এর ক্ষেত্রে খুব একটা কাজে আসবে না কারণ আমরা নরমালি যে গেমগুলো খেলি সেগুলো নরমালি 60GHz speed সাপোর্ট করে এর বেশি সাপোর্ট করেনা।
তবে কিছু কিছু হাই গ্রাফিক্সের গেম আছে যেগুলোতে 120 GHz speed সাপোর্ট করে আপনারা চাইলে সেগুলোতে মোটামুটি বেটার এক্সপেরিয়েন্স পাবেন।
তবে সেটিংসে গিয়ে আপনি চাইলে 60 GHz Frame per second করতে পারেন ব্যাটারি সেভ করার জন্য, কারণ 120 GHz Frame per second বেশি ব্যাটারি নষ্ট করবে।
এই ফোনের ডিসপ্লেটি Full HD + 20:9 ratio-র একটি ডিসপ্লে এবং একটি HDR 10 ডিসপ্লে। তাই আপনি HDR কন্টেন্টও খুব ভালোভাবে দেখতে পারবেন।
ডিসপ্লেটি পর্যাপ্ত পরিমাণে ব্রাইট up to 5000
তাই আউটডোরে ভিসিবিলিটি নিয়ে কোন ধরনের সমস্যা হবেনা।
সরাসরি সানফোকাস লাইটে খুব ভালো ভাবে ইউজ করতে পারবেন।
ইনডোরে তো ভালোভাবেই আসে আইপিএস এলসিডি প্যানেল হওয়া সত্ত্বেও এর ভিউইং কোয়ালিটি বেশ ভালো।
আর, সামনের কাটআউট থাকলেও কনটেন্ট দেখার বেলায় খুব একটা ডিস্টার্ব করে না।
আস্তে আস্তে অভ্যস্ত হয়ে গেলে একসময় আপনি নোটিশো করবেননা যে এখানে কিছু একটা আছে।
ফোনটির কালার ভ্যারিয়ান্ট পাবেন তিনটি (Red, Purple & Blue)
ফোনটিতে 256 GB ROM/8 GB RAM এর ভেরিয়্যান্ট আপনারা পাবেন।
ফোনটিতে ইউজ করা হয়েছে স্নাপড্রাগণ 730G.
G-মানে হচ্ছে গেমিং এর জন্য কিছুটা বুস্টেড টেকনোলজি। এবং ফোনটির GPU হচ্ছে Adriano 618.
এখন একটা কথা বলি POCO F1 এ আমরা দেখেছিলাম সে সময়ের ফ্ল্যগশিপ প্রসেসরটি ইউজ করা হয়েছিল কিন্তু এই POCO X2 যে মিড রেঞ্জের একটি প্রসেসর ইউজ করা হয়েছে।
সেই হিসেবে পারফরমেন্সের দিক থেকে POCO F1 থেকে POCO X2 কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও ডিজাইনের দিক থেকে কিন্তু POCO F1 থেকে অনেক এগিয়ে আছে POCO X2.
POCO F1 এর ব্যাক সাইটে প্লাস্টিক ইউজ করা হয়েছিল, বডিটাও ছিলো একটু মোটা সেখানে POCO X2 তে আমরা দেখতে পাচ্ছি এটাতে গ্লাস স্যান্ডউইচ ইউজ করা হয়েছে এবং বডিটা অনেকটা ফ্লিপ হয়েছে।
তার মানে হচ্ছে পারফরমেন্সে ফোকাস না করে এখানে বিল্ড ম্যাটারিয়েলে ফোকাস করা হয়েছে।
তার মানে এই নয় যে ফোনটিতে আপনি ভালো পারফরমেন্স পাবেন না।
এই ফোনটি দিয়ে দিয়ে আমি ডে টু ডের কাজ করে কোন ধরনের সমস্যা পাইনি।
গেমিং এর বেলায় বেশ ভালো পারফর্ম করেছে, আমি দুইটা গেম খেলেছি Call of Duty এবং PUBG.
PUBG তে বাই ডিফল্ট হাইগ্রাফিক্স সাজেস্ট করে এবং হাইগ্রফিক্সে বেশ ভালো পারফর্ম করেছে, কোন ধরনের ল্যাগিং এর দেখা পাই়নি স্পেশালি ডিসপ্লে বড় হওয়ার কারণে।
ফোনটিতে পেয়ে যাবেন MIUI 11 অন টপ অফ Android 10.
MIUI 10 থেকে অনেক বেটার ফিল করেছি কারণ এটাতে অ্যাড দেখা কম পেয়েছি।
অ্যাপ ড্রয়ার আছে এছাড়া অন্যান্য জিনিসগুলো খুব স্মুথলি কাজ করছে। ওভারঅল আমার কাছে ভালো লেগেছে।
Now let's talk about in Camera
ফোনের পেছনে ইউজ করা হয়েছে চার চারটি ক্যামেরা যার প্রাইমারিটি হচ্ছে 64 megapixel.
এবং এটিতে ইউজ করা হয়েছে Sony 686 সেন্সর এবং এই সেন্সরটি হচ্ছে এই ফোনে, K30 এবং Realme X2 তে ইউজ করা হয়েছে সেই সাথে এটাতে একটি 8 megapixel এর ultra-bight শুটার আছে সাথে 2 megapixel এর একটি মেক্রো এবং 2 megapixel এর আরেকটি Depth সেন্সর।
চারটি ক্যামেরার মধ্যে প্রাইমারি ক্যামেরার যে ছবিগুলো আছে সেগুলো বেশ ভালো পারফর্ম করেছে।
সামনের ক্যামেরায় ইউজ করা হয়েছে 20 megapixel এর একটি প্রাইমারি ক্যামেরা সাথে আছে একটি সেকেন্ডারি 2 megapixel এর সেন্সর।
সামনের ক্যামেরার ছবিগুলোও বেশ ভালো পারফর্ম করেছে যদি লাইট ভালো হয় এবং ইনডোর আউটডোর দুই জায়গায় আমি ছবি তুলে দেখেছি বেশ ভালই পারফর্ম করেছে।
এটাতে 4500MHz এর একটি ব্যাটারি ইউজ করা হয়েছে।
যদিও 100.20 GHz এর ডিসপ্লে যথেষ্ট power-hungry তবুও আপনি এই ফোনটি একবার চার্জ দিলে সম্পূর্ণ একদিন নরমাল ইউজে চালিয়ে নিতে পারবেন।
এখন আসি সর্বশেষ কথায়।।
যদি আমরা প্রাইস এর দিকে খেয়াল করি, তবে এই ফোনটি প্রাইস অনুপাতে খুবই ডিসেন্ট। এবং এই প্রাইসের মধ্যে একটা ফোনে যে ধরনের ফিচারস এবং যে ধরনের পারফরম্যান্স আপনি আশা করেন সব ধরনের পারফরম্যান্স এই ফোনে পাবেন।
আপনি যদি ফোনটি কিনতে আগ্রহী হন তাহলে অবশ্যই নিচের লিঙ্ক থেকে ফোনটি অনলাইনে অর্ডার করতে পারেন।
সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন আমার পরবর্তী ব্লগ পাবলিশ হবার আগ পর্যন্ত অপেক্ষা করুন
ধন্যবাদ।।।
0 মন্তব্যসমূহ